ত্বকের যত্ন বলতে যেন মূলত আমরা মুখের ত্বকের কথাই বুঝি। অথচ সঠিক যত্নের অভাবে আমাদের গলার ত্বকে সবার আগে বয়সের ছাপ পড়ে।
এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, আমাদের যত স্কিনকেয়ার পণ্য আছে, তার বেশির ভাগই মুখমণ্ডলের ত্বকের যত্নের জন্য। হাত–পায়ের যত্নও আলাদা করে করি আমরা, কিন্তু শরীরের যে অংশে সঠিক সময়ে উপযুক্ত যত্ন না নিলে অনাকাঙ্ক্ষিত বয়সের ছাপ পড়ে যায়, সে নিয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন নই। অবশ্য সবার যে জানা আছে, বিষয়টি তা–ও নয়। তাই সবার আগে গলার ত্বকের ধরন, এখানে বয়সের ছাপ পড়ার প্রকৃতি ও কারণ আর সবশেষে এর প্রতিকারের সবকিছু জেনে নিতে হবে ভালো করে।
আমরা অনেক সময়ই দেখি অনেকের চেহারার টান টান সুন্দর আর পেলব ত্বক। কিন্তু তার ঠিক নিচেই গলার ত্বকের ভাঁজ আর ঝুলে পড়া ভাব জানান দিয়ে দেয় মেঘে মেঘে বেলা হয়ে গেছে। গলার ত্বক মুখের চেয়ে অনেকটাই পাতলা। তাই কোলাজেন সাপোর্ট একটু কমলেই কুঁচকে, ঝুলে আর নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে তা। খেয়াল করলে দেখা যাবে এতে সিবেশিয়াস গ্রন্থি, রোমকূপ আর সেই সঙ্গে ফলিকল নেই তেমন। ত্বককে নতুন জীবন দেওয়া স্টেমসেল তৈরির অবকাশও কম গলার ত্বকে।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে যত্ন না নিলে গলায় গভীর কিছু আড়াআড়ি দাগ পড়ে। আর ত্বক আরও পাতলা হয়ে যায় এখানে। ঝুলে বা কুঁচকে যায় ত্বক। সত্যিকার অর্থেই বয়সের ছাপ শরীরে প্রথম এখানেই পড়ে। আর গলার ত্বকের এমন বুড়িয়ে যাওয়া সম্পূর্ণ রুখে দেওয়ার কোনো জাদুকরী পদ্ধতি নেই। কিন্তু প্রথম থেকেই এ অংশের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিশেষ যত্ন নিলে গলার ত্বক সুন্দর ও তারুণ্যময় থাকবে।
১. প্রতিদিন নিয়ম করে পরিষ্কার করা
মুখ ক্লিনজিং করার সঙ্গে সঙ্গে থুতনি থেকে বুক পর্যন্ত অংশের ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। এ অংশ উন্মুক্ত থাকে বলে মুখের মতোই ধুলা, ঘাম ময়লায় জর্জরিত হয়। এখানে মেকআপ করা হয় কিন্তু মুখের মেকআপের মতো মন দিয়ে তোলা হয় না তা প্রায়ই। গলা ধোয়া একটু অসুবিধাজনক অবশ্য। তাই তুলায় মাইসেলার ওয়াটার নিয়ে কাজটি আরামে করা যায়। তবে করতে হবে তা সময় নিয়ে, কোনো অংশ বাদ না দিয়ে।
২. গলায় সানস্ক্রিন ব্যবহার করা
মুখের মতো গলায়ও সমান গুরুত্ব দিয়ে সানস্ক্রিন দিতে হবে। সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি গলার পাতলা, সংবেদনশীল ত্বকের দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া আরও ত্বরান্বিত করবে। দাগছোপ, বিবর্ণ হওয়া বা সূক্ষ্ম রেখা অর্থাৎ ফাইন লাইনও হবে সময়ের সঙ্গে। এসপিএফ ৩০ বা তার চেয়ে বেশি মাত্রার সানস্ক্রিন দিতে হবে গলায়। দুই থেকে চার ঘণ্টা পরপর আবার দিতে হবে।
৩. সকালে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট সিরাম ব্যবহার করা
সানস্ক্রিন যেমন সূর্য থেকে বাঁচায় ত্বককে, তেমনি পরিবেশের বিষাক্ত উপাদানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পারে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। তা অসময়ে বুড়িয়ে যাওয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করতে পারে। সকালে এই সিরাম গলায় সময় নিয়ে দিতে হবে।
৪. রাতে একটি মৃদু রেটিনয়েড ব্যবহার
মুখ ও গলা ধোয়ার পর একটু মৃদু মাত্রার রেটিনয়েড দিলে মিলবে চমৎকার সুফল। এতে ত্বকে কোলাজেন ক্ষয় হওয়া কমে যাবে৷ আর বাড়বেও এর উৎপাদন। তবে গলার জন্য রেটিনয়েড অন্য কিছুর সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হয়৷ মনে রাখতে হবে, গলার ত্বক খুবই পাতলা ও সেনসিটিভ।
তথ্যসূত্র: এল ম্যাগাজিন
ছবি: পেকজেলস ডট কম
হিরো ইমেজ: হাদী উদ্দীন
মডেল: সাফা মারুয়া